উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়ায় হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থান প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও ১৫৩৬ জন অতি দরিদ্র শ্রমিক তাদের মজুরির টাকা পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসসহ সংশ্লিষ্টদের অনৈতিক দাবির প্রেক্ষিতে প্রকল্পের শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। দিনমজুর শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদৌ আদায় হয় কিনা তা নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ।
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, উখিয়ার ৫ ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হত দরিদ্রদের কর্মসংস’ান কর্মসূচির আওতায় ৫ ইউনিয়নের ৩৪টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এ বছরের ২ এপ্রিল। ৪০ দিনের কার্যদিবস শেষ হওয়ার প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত চললেও শ্রমিকরা অর্ধেক মজুরি (দুই কিস্তির টাকা) পায়নি। ঈদের আগে মজুরির টাকা আদায়ের জন্য এসব শ্রমিকেরা পাগলের মতো প্রকল্প সভাপতি সহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালেও কোন কাজ হয়নি। অনন্যোপায় হয়ে স’ানীয় শ্রমিকের একাংশ ঈদের আগে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে উপসি’ত হয়ে মজুরির টাকা না পাওয়ার বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ছেনুয়ারা বেগম একটি লিখিত অভিযোগ করার কথা বলে মজুরি পাওয়ার আশ্বস্ত করলেও প্রায় দেড় হাজার হত দরিদ্র শ্রমিক টাকা না পাওয়ার কারণে ঈদের আনন্দ থেকে তাদের ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হয়েছে শ্রমিকদের দাবি।
ইউপি নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কর্মসৃজনের কাজ চলমান থাকার সুযোগে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সভাপতিরা কাজ না করেই বিল উত্তোলনের চেষ্টা করে। এ সময় অনেক দেন দরবার সহ অতিরিক্ত পার্সেন্টেস পরিশোধ করে দুই কিস্তির টাকা আদায় করা হলেও ভুক্তভোগীরা শ্রমিকেরা ন্যূনতম মজুরি পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জালিয়াপালং ইউনিয়নের চোয়াংখালী কর্মসৃজন প্রকল্পের সভাপতি জাহেদ মেম্বার জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সহকারী মিজান বিভিন্ন অজুহাত তুলে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দাবি করে। টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ছাড় দেয়নি। একই অভিযোগ মরিচ্যাপালং সাবেক ইউপি সদস্য ইসলাম মেম্বারের। তিনি বলেন, অফিস সহকারীর অনৈতিক দাবি রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ পর্যন্তও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে উখিয়ার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জুবায়ের আহমদের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, উখিয়া পিআইও অফিসের এমএলএসএস কামরুলের সাথে যোগাযোগ করতে। কামরুলের কাছে জানতে চাওয়া হলে সে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকার কথা বলে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা (ডিআরও) জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ওই সময় একটি সেমিনারে কথা বলে সংযোগ কেটে দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন জানান, যে সমস্ত প্রকল্পে কাজ হয়নি, ওই সমস্ত প্রকল্প পুনঃতদন্ত সাপেক্ষে টাকা ছাড় দেওয়ার ব্যবস’া করা হবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকল্প সভাপতি অভিযোগ করে জানান, উখিয়া পিআইও অফিসে স’ায়ী কোন কর্মকর্তা না থাকায় অফিস সহকারী মিজান তার ইচ্ছানুযায়ী দায়-দায়িত্ব পালন করছে। কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরির টাকা ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই অফিস সহকারী বেপরোয়া আচরণ করার কারণে অনেকেই পিআইও অফিসে যেতে ইচ্ছা পোষণ করেন না। এ অভিযোগ সত্যতা জানতে চাইলে অফিস সহকারী মিজান তা অস্বীকার করেন।
পাঠকের মতামত